
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের হাজী আলাউদ্দিনের সঙ্গে একই এলাকার ব্যবসায়ী সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক মোল্লার আধিপত্য বিস্তার ও একটি কোম্পানির বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে দ্বন্ধ চলে আসছে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে কামাল, গোলজার, বাদল, আরিফসহ ২০-২৫জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র, রামদা, বল্লম, ছেনা, চাপাতি, লোহার রডে সজ্জিত হয়ে ব্যবসায়ী সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক মোল্লার দোকানে হামলা চালায়। হামলায় সাদেকুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা বরজাহান, রেখা, তাসলিমা, সায়বা, জাবেদ, জিসানসহ ১০ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। ঘটনার সময় সাদেকুর রহমানের আত্মীয় স্বজনদের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সাদেকুর রহমানের লোকজন দেশীয় অন্ত্রে সজ্জ্বিত হয়ে আলাউদ্দিন পক্ষের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এসময় উভয় পক্ষের লোকজন মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আলাউদ্দিন পক্ষের সমর আলী, জাহিদুল ইসলাম, মাহিলউদ্দিন, মোশারফ, নুর নবী, নিলা, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল আলীসহ ৮ জন, সাদেক পক্ষের খোরশেদ আলম, সাইদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, বিপ্লব, সুমন, শাকিল, মাহফুজ, ছোট সুমনসহ ১২ জন আহত হয়। এদের মধ্যে আলাউদ্দিন পক্ষের সমর আলী সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর মারা যান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ,দীর্ঘদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্ধ চলছে। কয়েকদিন পর পর এ এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। গত কোরবানী ঈদের আগের দিনও তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় মহিলাসহ প্রায় ২৫জন আহত হয়েছিল। এ দুপক্ষের জন্য সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিঘœ হচ্ছে। হাজী আলাউদ্দিনের ছেলে পুলিশ সদস্য হওয়ার কারনে তিনি প্রভাব বিস্তার করে এলাকার লোকজনকে জিম্মি করে রেখেছেন।
সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক মোল্লার স্ত্রী শেফালী বেগমের অভিযোগ, পূর্ব শত্রæতার জের ধরে আমার স্বামীর দোকানে ৩০-৩৫ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। আলাউদ্দিনের নির্দেশে হত্যার উদ্দেশ্য কুপিয়ে জখম করে। এছাড়াও আমাদের লোকজনের দোকান ও বাড়িঘরে শুক্রবার ও শনিবার সকালে দুই দফায় বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুর করে। আমাদের প্রায়২০-২২জনকে কুপিয়ে আহত করে।
অভিযুক্ত আলাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা উশৃঙ্খল লোক। আমার আত্মীয় সমর আলীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এর আগেও আমার এক ভাতিজাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় মিমাংসার কথা বলে তার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। শুক্রবার রাতে আমি বাড়ি ফেরার সময় আমার উপর পুনরায় তারা হামলা করে। শনিবারও আমাদের লোকজনের বাড়িঘর ও দোকান ভাংচুর করে।
সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত তবিদুর রহমান বলেন, দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে।